বিড়ির আগুনে পড়ালেখা করে জিপিএ ৫ পেয়েছে ময়মনসিংহ এর মনির
বিড়ির আগুনে পড়ালেখা করে জিপিএ ৫ পেয়েছে ময়মনসিংহ এর মনির
মানুষের সাফল্যের গল্প কখনো ছাড়িয়ে যায় সিনেমাকে। তবে ময়মনসিংহ এর মনিরের গল্পটা আরো এক ধাপ এগিয়ে। তার সাফল্য ছাড়িয়ে গেছে রূপকথার গল্পকেও। গতবছর বিড়ির আলোতে পড়ালেখা করে জিপিএ ফাইভ পাওয়া এক শিক্ষার্থীর কথা জানা যায়। সেই কীর্তিকে পেছনে ফেলে ময়মনসিংহ এর মনির জিপিএ ফাইভ পেয়েছে বিড়ির অতি মৃদু আলোতে পড়ে।
নিজের কম্পিউটারে নিজের রেজাল্ট দেখার পর ডুকরে কেঁদে উঠেন মনির। না, এই কান্না খুশির না! এই কান্না বিস্ময়ের! কাঁদতে কাঁদতেই নান্টু আমাদের বলেন, ‘মানে ভাই ক্যামনে!! এই রেজাল্ট হাতে পাওয়ার এমন শক খাইছি সারা শরীর জ্বলতেছে। সারাবছর বিড়ি গাজা নিয়া পইড়া থাইকা এই রেজাল্ট ক্যামনে সম্ভব।’
‘এভাবে না, কিছু দৃঢ়তা, দৃষ্টান্ত, স্ট্রাগল, চেষ্টা যোগ করে বলুন’ আমাদের প্রতিনিধির এমন নির্দেশনায় মনির বলেন, ‘আমি আসলে একটা দৃষ্টান্ত রেখে যেতে চাইছিলাম। ল্যাম্পপোস্ট, কুপিবাতি এইসব সো মেইনস্ট্রিম। তার তুলনায় বিড়ির আলো আস্ত একটা চমক লাল, দেখতেও সুন্দর। কত রাত গেছে নিজের কাছে মাঝে মাঝে সিগারেট কেনার পয়সাও থাকতো না। বন্ধু বান্ধবদের খাওয়া বিড়ি এনে জ্বালিয়েছি সেই আগুনে রাত জেগে পড়াশোনা করে আজকে এই ফলাফল।
নিজের সংকল্পবদ্ধ পথচলা নিয়ে মনির বলেন, ‘ঘরের মধ্যে বিড়ির আগুনটুকুই ছিলো আমার সবচেয়ে আপন। রুমে আসার সাথে সাথে আমার প্রথম স্পর্শ হতো ওর সাথে। এমনকি প্রতিদিন ঘুম ভাঙ্গার পর চোখ না খুলেই আমি এই পাওয়ার বাটনকেই চেয়েছি। টানা ২ বছর আমি এই নিয়ম মেনে চলেছি। না, আমি অন্যদের মতো বাপ-মায়ের সাপোর্ট পাইনি। আমার এই ট্রাম্প কার্ড বিড়ির আগুনের জন্য বাবা-মা প্রতিদিনই কথা শুনিয়েছেন। এই বিড়ি খাওয়া ছাড়াতে আমাকে পিটিয়ে বাসা থেকে বেড় করে দিতে চেয়েছে অনেকবার। বাট আমি তাকে বুক দিয়ে আগলে রেখেছি।’
বিড়ির আলোতে পড়া এই মনির বড় হয়ে জগতের মহীরূহ হওয়ার আশা ব্যাক্ত করে আমাদের বলেন, ‘আমি বড় হয়ে বিড়ির আগুনে পড়ে মানুষের মতো মানুষ হতে চাই ।
সিগারেটের এমন আকস্মিক মূল্য বৃদ্ধিতে নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে উৎকন্ঠায় আছে এই মনির।