ডেইজি আপার সালাম না নেওয়ায় পেট খারাপ হয়ে গেল বন্ধু আবুল কালামের!
৩১ এর উন্নয়ন ডেইজি আপার দুই নয়ন কিংবা ডেইজি আপার সালাম নিন লাঠিম মার্কায় ভোট দিন।এমন স্লোগানে সয়লাব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুক। তার আগে চলুন জেনে আসি কে এই ডেইজি সরোয়ার উরফে ডেইজি আপা
পরিচয়: সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার ০৫নং বুধবারীবাজার ইউপির কুশিয়ারা তীরবর্তী চন্দরপুর গ্রামের এক রাজনৈতিক পরিবারের মেয়ে আলেয়া সারোয়ার ডেইজি। বাবা বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোঃ মতলিব আলী। চাচা ও মামারা সক্রিয় রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন।
চাচা একে এম গউছ সিলেট-৬ আসনের এমপি ছিলেন এবং মামা বাবরুল হোসেন বাবুল ৭১-এ দেশ স্বাধীন হওয়ার পর সিলেট পৌরসভার প্রথম চেয়ারম্যান পরে উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলেন। ১৯৯০ সালে তিনি এক সেনা কর্মকর্তার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বর্তমানে তাদের এক মেয়ে ও এক ছেলের রয়েছে। মেয়ে যুক্তরাজ্যে অ্যারো স্পেস নিয়ে এবং ছেলে দার্জিলিংয়ের সেন্ট যোসেফে পড়ছে।

আলেয়া সারোয়ার ডেইজি, ঢাকা উত্তর সিটির অতি পরিচিত এক নাম। সিলেটের মেয়ে হয়ে যিনি রাজধানী ঢাকা শহরে নেতৃত্ব দেয়ার এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তিনি ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পেয়ে সংরক্ষিত- ১২ নং ওয়ার্ডের (ওয়ার্ড নং ৩১, ৩৩ ও ৩৪) কাউন্সিলর নির্বাচন করেন। এর পূর্বে তিনি ঐ এলাকায় বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ডে জড়িত ছিলেন।
মোহাম্মদপুর ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা তিনি, এছাড়াও লায়ন্স ক্লাব, এপেক্স ক্লাবসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক অঙ্গনে বিচরণ ছিল তার। এজন্য দলমত নির্বিশেষে সকলের কাছে তার গ্রহণযোগ্যতা ছিল। সর্বমহলের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে তিনি ব্যাপক প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচনে জয়লাভ করেন।
২০১৩ সালের জাতিসংঘের অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী ছিলেন ডেইজি। ২০০০ সাল থেকেই সক্রিয় রাজনীতির অঙ্গনে নিজেকে প্রমাণ করে প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ট হয়ে উঠেন ডেইজি।
২০০০ সালেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিকনির্দেশনায় বাংলাদেশ যুব মহিলালীগ গঠনের লক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা কমিটি গঠন করার কাজে যোগ দেন ডেইজি। শেখ হাসিনা প্রথমেই সিলেটে কমিটি গঠন করার ইচ্ছা প্রকাশ করলে তা পূরণের আশ্বাস দিয়ে কাজে লেগে যান ডেইজি সারোয়ার।
সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের সাথে সাক্ষাৎ করে পরামর্শ, উপদেশ ও সহযোগিতা নিয়ে আত্মীয়স্বজন বন্ধু- বান্ধব ও পরিচিতজনদের উদ্বুদ্ধ করে গঠন করেন যুব-মহিলা লীগ, সিলেটের কমিটি। স্বয়ং শেখ হাসিনাই এ কমিটির ঘোষণা করেন।
ডেইজির কাজে সন্তুষ্ট হয়ে শেখ হাসিনা চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বও দেন তাকে। সেখানেও কমিটি গঠনে সফলতা দেখান তিনি। একপর্যায়ে দেশের বিভিন্ন জেলা-থানার কমিটি গঠন শেষে কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করা হলে সেখানে সাংগঠনিক পদ পান ডেইজি। অদ্য ২৫ জুলাই ২০১৭ইং তারিখে নতুন কমিটি গঠন করা হলে সেখানেও সহ-সভাপতির পদ পান ডেইজি সারোয়ার।
এতদূর আসার পথে রাজনৈতিক প্রতিহিংসায়ও পড়তে হয় ডেইজিকে। ২০০২ সালে বিএনপি-জামায়াত সরকারের আমলে কারাবরণ করতে হয় তাকে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে রাজপথেও ছিলেন সক্রিয়। অনির্বায কারণে ফের তাকে গ্রেফতার হয়ে কারাবরণ করতে হয়।
রাজনৈতিক পরিচয় ছাড়াও ডেইজি সারোয়ার একজন সংগীত শিল্পী। ছোটকাল থেকেই তিনি গান গাইতেন গীটার বাজাতেন। তিনি বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনের তালিকাভুক্ত শিল্পী। তিনি একজন সফল উদ্যোক্তাও। দেশে প্রথমবারের মতো ডেইজি সারোয়ার আগ্রহী ৫০ জন নারী উদ্যোক্তা নিয়ে উইম্যান্স হলিডে মার্কেট চালু করেছেন।
যা দেশ বিদেশে প্রচুর আলোচিত ও প্রশংসিত হয়েছে। মহাখালী বাস টার্মিনালের উত্তর পাশে নবনির্মিত মহাখালী পাইকারি কাঁচাবাজার প্রাঙ্গণে এই মার্কেটটি বসবে। সপ্তাহের ছুটির দিন শুক্রবার ও শনিবার এই মার্কেটে আগ্রহী নারী ও পুরুষেরা গৃহস্থালিসহ নিত্যব্যবহার্য সব পণ্য ক্রয়-বিক্রয় করতে পারবেন।
সবমিলিয়ে ডেইজি সারোয়ার একজন সফল নেতৃত্বদানকারী হিসেবে সর্বমহলে প্রশংসিত। সেই ছোটকাল থেকেই তিনি নেতৃত্বদানকারী হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। তিনি ৭ম শ্রেণীতে থাকা কালেই ইয়েলো বার্ড লিডার ও পরবর্তীতে গার্লস গাইড লিডার ছিলেন। ঐ সময়ই তিনি দ্বিতীয় জাতীয় গার্লস গাইড ক্যাম্পেইনে অংশগ্রহণ করে বিভিন্ন পুরস্কার অর্জন করেন।
তিনি সিলেট বিভাগের প্রথম ভলিবল টিমের সদস্য হয়ে জাতীয় পর্যায়েও খেলার সৌভাগ্য অর্জন করেন। কম বয়সেই তিনি গাড়ি চালানো শিখে ফেলেন। ৭ম শ্রেণীতে থাকা কালেই সিলেটের স্থানীয় শিশু-কিশোর পত্রিকা ঝুমকোলতায় সাক্ষাৎকার দেন আলেয়া সারোয়ার ডেইজি।
আর এই ডেইজি আপার সালাম না নেওয়ায় যেন কাল হলো বন্ধু আবুল কালামের। সে ডেইজি আপাকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করায় তার এখন পেট খারাপ।