মিরপুর যাওয়ার পথে পাবলিক বাসে বগলের ঘামের গন্ধে অজ্ঞান ০২ যাত্রী!
মিরপুর ঢাকার খুব অদূরে অবস্থিত একটি জনপদ। এই জনপদের মানুষকে নিয়ে সকলের রয়েছে তীব্র কৌতূহল।এই জনপদের মানুষকে আদর করে ডাকা হয় “গরীবের রেড ইন্ডিয়ান”।তাদের দেখলে মনে হয় যেন মহাবন এমাজন ট্রাইএঙ্গেলের ভেতর এক টুকরো হারিয়ে যাওয়া রেড ইন্ডিয়ান।এই জনপদেত মানুষকে অনেকে আবার লিভিং ফসিল বা জীবন্ত জীবাশ্ম ও বলেন।
বাজারে প্রচলিত আছে, মিরপুরে সকাল হয় পাঁচ মিনিট পরে কারন সূর্যের আলো এখানে পাঁচ মিনিট দেরী করে আসে। মেট্রো রেলের কারনে আসন্ন সূর্যের আলো জ্যামে পড়ে তাই এখানে আসতে কয়েক মিনিট দেরী হয়ে যায়।
বর্ষার ভরা মৌসুমে এই জনপদের মানুষের একমাত্র চলাচলের বাহন খেয়া নৌকা।তখন রাস্তা পানিতে ডুবে যায়।অনেকে সাঁতরিয়ে ইস্কুল,কলেজ,এবং অফিসে যাতায়াত করেন।এখানে উবার কিংবা পাঠাওয়ের মতো রাইড শেয়ারিং এপস কাজ করে কদাচিৎ। একটু বৃষ্টি হলেই ইন্টারনেট প্রোভাইডাররা এখানে ইন্টানেট বন্ধ করে দেন। শতোবার রাউটার অফ অন করেও নেট না এসে হতাশ হয়ে শুয়ে পড়তে হয় এই জনপদের মানুষের।
গ্রীষ্মে এখানের মানুষের তিনবেলা খাবার মেট্রোরেলের জ্যাম এবং ধুলো।তারা ব্রেকফাস্টে জ্যাম এবং ধুলোবালি খেতে অফিসে যান। ডিনারে আবার হালকা ট্রাফিক জ্যাম এবং ধুলো খেয়ে বাসায় ফেরত আসেন।
পাবলিক বাসের অবস্থা ও যেন এখানে লক্কর ঝক্কর।পুরাতন এবং হাজার বছরের ধ্বংসাবশেষ বাস এখানে দেখতে পাওয়া যায় এখানে। এসব বাস মিরপুর বাসীদের যাতায়তের দায়িত্ব নিষ্ঠার সাথে পালন করছে অনেকদিন ধরেই।
গতকাল ইফতারির আগে আগে এক ভয়ানক দু:সংবাদের মুখোমুখি হতে হয়েছে এই জনপদের মানুষের।যদিও দু:সংবাদ তাদের নিত্যসঙ্গী।নতুন করে দু:সংবাদ তাদের জন্যে পানিভাত।
মিরপুর যাওয়ার পথে পাবলিক বাসে ঘামের গন্ধে অজ্ঞান হয়ে যান ০৩ জন! জানা যায় তারা সারাদিন অফিস শেষে বাসায় ফিরতেছিল ইফতারি করার জন্যে।
সাথে সাথে অজ্ঞান তিন ব্যাক্তিকে হাসপাতালে পাঠানো হয় চিকিৎসার জন্যে।
জ্ঞান ফিরলে তাদের কাছে জিজ্ঞেস করা হয় তারা কেন অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিল? তাদের একজন বলেন,
“আর বইলেন না রে ভাই।অনেক ঠেলাঠেলি করে ধাক্কায়া ধুইক্কায়া বাসে কোনমতে উঠছিলাম। আমরা তো জানি আমরা কখনোই বাসায় ঠিক টাইমে গিয়া ইফতারি করতে পারুম না।তবুও মানুষ আশায় বাঁচে।স্বপ্ন দেখার অধিকার কি মিরপুরের মানুষের নাই?”
ভোক্তভোগীর কথা শুনে আমরা মাথা ঝাঁকায়া বলি “হ্যা অবশ্যই আছে। কেন থাকবে না।তারাও তো মানুষ”
উনি আমাদের মুখের কথা কেড়ে নিয়ে বলেন, সেটাই।তাই বাসে উঠসিলাম। কিন্তু কে জানতো এরকম হবে। এতো ভীড়! এত মানুষ। তার উপর গরম। পাশে দাড়ায়া ছিল মোটা করে এক ভদ্রলোক।কিছুক্ষন পরপর ঘাম মুছতে ছিল। আমার নাকে আসতে ছিল তার ঘামের গন্ধ।আমি একটু ফাঁক করেই তার পাশেই ডুকে পড়ি।তারপর কি হয়েছে আর বলতে পারবো না।জ্ঞান ফিরে দেখি আমি হাসপাতালের বেডে শুয়ে আছি ভাই।
ডাক্তার প্রাথমিক ভাবে ধারনা করেছেন,ঘামের গন্ধেই তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছেন।