ঈদের সালামি পাবে কি পাবে না এই চিন্তায় রাতে ঠিকমতো ঘুম হচ্ছে না ফ্যামিলির ছোট মেয়েদের!

ঈদের সালামি পাবে কি পাবে না এই চিন্তায় রাতে ঠিকমতো ঘুম হচ্ছে না ফ্যামিলির ছোট ছেলে-মেয়েদের!

করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কারণে এবার ঈদগাহ বা খোলা জায়গার পরিবর্তে ঈদ-উল-ফিতরের নামাজের জামাত নিকটস্থ মসজিদে মাস্ক পরে আদায় করার জন্য অনুরোধ করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

তাই ইদের নামাজ না হলে সালামি পাবার ও কোন সুযোগ থাকছে না বলে আশঙ্কা করেছেন কেউ কেউ। বাসার মুরুব্বিরা অবশ্য সালামি নিয়ে মুখ খুলছেন না।

এমন অবস্থায় দারুন অনিশিচয়তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে কেউ কেউ। তাদের মধ্যে ফ্যামিলির  ছোট মেয়ে বসুন্ধরার সাদিয়া একজন।

সাদিয়া দু:খ করে আমাদের জানান,ফ্যামিলির ছোট বলে প্রতিবছর হাজার হাজার টাকা সালামি পাই। কিন্তু এবার মনে হচ্ছে করোনা ভাইরাসের কারনে এক টাকা ও পাবো না।

সালামি ব্যাবসা লাটে উঠেছে। সারা বছরে মাত্র দুইবার ব্যাবসা।তাও যদি ঠিকমতো না করতে না পারি তাহলে সারাবছর জাস্ট ফ্রেন্ড আর বয় ফ্রেণ্ডদের নিয়ে না খায়া থাকতে হবে ভাইয়া।

‘ডেইটের বিল/মেকাপের বিল/তমুক বিল কেমনে ম্যানেজ করবো?এবার আমাকে পথে বসতে হবে ‘বলে সাদিয়া হাপুস নয়নে কাঁদতে থাকে।কান্নায় সাদিয়ার মেকাপ নষ্ট হয়ে যায়। বলে উদাস হয়ে যায় সাদিয়া

তারপর বিরস মুখ করে অন্যদিকে তাকিয়ে বলে, কারো বাসায় যেতে পারবো না।কেউ বাসায় আসতে পারবে না।আপনি বলুন ভাইয়া সালামি কেমনে পাবো?কেমনে?

আমাদের নিউজ রিপোর্টার ছোটমেয়ে সাদিয়াকে  বুদ্ধি দিয়ে বলে,বিকাশ/রকেট আছে না? বিকাশে বলবেন দিতে।

এই বুদ্ধি শুনে ফ্যামিলির ছোট মেয়ে সাদিয়া আনন্দে কেঁদে ফেলেন । তারপর খুশিতে পা ছুয়ে আসেন সালাম করতে। সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে আমাদের রিপোর্টার ৩ ফুট দূরে চলে যায়। তাই আর সাদিয়া আর শেষ মেশ সালাম করতে পারে নি।

 

কিন্তু সাদিয়া দাবী করে সালামি দেবার ভয়ে আমাদের রিপোর্টার দৌড়ে পালিয়ে এসেছে

 

এদিকে বৃহস্পতিবার (১৪ মে) করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কারণে ঈদের মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সাধারণ ছুটির বাড়ানোর নির্দেশনায় এ অনুরোধ করেছে মন্ত্রণালয়।


এছাড়া করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধ নিশ্চিতকল্পে মসজিদে জামাত শেষে কোলাকুলি এবং পরস্পরের হাত মেলানো পরিহার করার জন্যও অনুরোধ করা হয়েছে।

আগামী ১৭  থেকে ৩০ মে সাধারণ ছুটি বৃদ্ধির পর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ নির্দেশনায় জানায়, আসন্ন ঈদ-উল-ফিতরের নামাজের ক্ষেত্রেও বর্তমানে বিদ্যমান বিধি-বিধান প্রযোজ্য হবে। উন্মুক্ত স্থানে বড় জমায়েত পরিহার করতে হবে। ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারি করবে।

‘স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরের নামাজের জামাত আদায়’ নিয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ইসলামী শরিয়তে ঈদগাহ বা খোলা জায়গায় পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরের নামাজের জামাত আদায়ের ব্যাপারে উৎসাহিত করা হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে সারা বিশ্বসহ আমাদের দেশে করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিজনিত কারণে মুসল্লিদের জীবন ঝুঁকি বিবেচনা করে এ বছর ঈদগাহ বা খোলা জায়গার পরিবর্তে নিকটস্থ মসজিদে জামাত আদায় করার জন্য অনুরোধ করা হলো। প্রয়োজনে একই মসজিদে একাধিক জামাত অনুষ্ঠিত হবে।

‘ঈদের নামাজের জামাতের সময় মসজিদে কার্পেট বিছানো যাবে না। নামাজের আগে সম্পূর্ণ মসজিদ জীবাণুনাশক দ্বারা পরিষ্কার করতে হবে। মুসল্লিদের প্রত্যেকে নিজ নিজ দায়িত্বে জায়নামাজ নিয়ে আসবেন।’

করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধ নিশ্চিতকল্পে মসজিদে ওজুর স্থানে সাবান বা হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখতে হবে এবং মসজিদের প্রবেশদ্বারে হ্যান্ড স্যানিটাইজার বা হাত ধোয়ার ব্যবস্থাসহ সাবান-পানি রাখতে হবে।

প্রত্যেককে নিজ নিজ বাসা থেকে ওজু করে মসজিদে আসতে হবে এবং ওজু করার সময় কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে।

ঈদের নামাজের জামাতে আগত মুসল্লিকে অবশ্যই মাস্ক পরে মসজিদে আসতে হবে। মসজিদে সংরক্ষিত জায়নামাজ ও টুপি ব্যবহার করা যাবে না।

ঈদের নামাজ আদায়ের সময় কাতারে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে শারীরিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে দাঁড়াতে হবে। এক কাতার অন্তর অন্তর কাতার করতে হবে।

শিশু, বয়োবৃদ্ধ, যে কোনো অসুস্থ ব্যক্তি এবং অসুস্থদের সেবায় নিয়োজিত ব্যক্তি ঈদের জামাতে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।

সর্বসাধারণের সুরক্ষা নিশ্চিতকল্পে, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, স্থানীয় প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণকারী বাহিনীর নির্দেশনা অবশ্যই অনুসরণ করতে হবে।

‘করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধ নিশ্চিতকল্পে মসজিদে জামাত শেষে কোলাকুলি এবং পরস্পর হাত মেলানো পরিহার করার জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে।’

করোনা ভাইরাস মহামারি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরের নামাজ শেষে মহান রাব্বুল আল-আমিনের দরবারে দোয়া করার জন্য খতিব ও ইমামদের অনুরোধ করেছে সরকার।

You may also like...