বেশীদিন বাঁচতে মেয়েদের উচিত তাদের বয়সের কমপক্ষে তিন বছরের ছোট কাউকে বিয়ে করা- বলছে গবেষণা
বেশীদিন বাঁচতে মেয়েদের উচিত তাদের বয়সের কমপক্ষে তিন বছরের ছোট কাউকে বিয়ে করা- বলছে গবেষণা
মেয়েদের উচিত তাদের বয়সের কমপক্ষে তিন বছরের ছোট কোন ছেলেকে বিয়ে করা।কারন দেশে গড় আয়ু ৭২.৩ পুরুষের চেয়ে ৩ বছর বেশী নারী।
তাই শেষ বয়সে একাকীত্ব না কাটাতে বেশীদিন বাচতে জুনিয়রদের বিয়ে করার পরমার্শ গবেষকদের।
বিয়েকে বর্তমানে সেকেলে প্রথা বলে মনে করছেন অনেকেই। তরুণ-তরুণীরা আনুষ্ঠানিকভাবে ‘অবিবাহিত’ থাকতে রক্ষণশীল ও ‘পছন্দসই বিয়ের’ সন্ধান করছেন।
কিন্তু ঐতিহ্যগত দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী সমাজ এখনো বিশ্বাস করে, প্রতিটি ব্যক্তির জীবনে পরিবার অপরিহার্য একটি বিষয়। আর সেই পরিবার তৈরি হয় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার মাধ্যমে।
জুনিয়র বিয়ের সুবিধা-অসুবিধা উভয়ই রয়েছে। এতে ইতিবাচক দিকই বেশি।
কেননা মিলটা যদি সুখের হয় তাহলে ওই দম্পতি আর্থিক সুবিধা, মানসিক সমর্থন ও ভালো স্বাস্থ্য পেতে পারেন। এছাড়া বিয়ের পরও ওই দম্পতির সন্তানরা অনেক সুখী ও মানসিকভাবে স্বাস্থ্যসম্মত হবেন।
বিয়ের ১০টি গুরুত্বপূর্ণ উপকারিতা সম্পর্কে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া। সেই উপকারিতাগুলো উপস্থাপন করছে বাংলানিউজ।
দীর্ঘ জীবন
পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, অল্প বয়সে মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে অবিবাহিতদের সংখ্যা বিবাহিতদের দ্বিগুণ। কারণ স্বামী-স্ত্রীরা প্রয়োজন হলে একে অপরের ভালো যত্ন নিতে পারেন। এছাড়া সহযোগীদের সমর্থন ও সাহায্যও পেতে পারেন। ফলে বিবাহিতরা নিজেদের যত্ন নেওয়ার জন্য দম্পতির প্রতি দায়িত্ববোধ ও বাচ্চা নেওয়ার কথা ভাবেন। তারা বুঝতে পারেন যে, প্রয়োজন পড়লে সহায়তা করার জন্য তাদের কেউ একজন রয়েছেন। তাই কেউ দীর্ঘজীবী হতে চাইলে তাকে বিয়ে করার পরামর্শ দিয়েছেন অভিজ্ঞরা।
তবে সত্যিকারের আদর্শ জীবনসঙ্গী না পেয়ে বিয়ে করলে সেটা চরম ভুল হবে বলেও মন্তব্য করেন তারা।
নিজের দেখাশোনা
বিবাহিত নারী-পুরুষ স্বাস্থ্যবান বলে পরিসংখ্যানের ফলাফলে দেখা যায়। দম্পতিরা তাদের প্রিয়তমের প্রতি দায়িত্ব অনুভব করে খারাপ অভ্যাস ত্যাগ করে নিজের সর্বচ্চ যত্ন নেওয়া শুরু করেন, যা তাকে স্বাস্থ্যবান ও দীর্ঘজীবী হওয়ার ক্ষেত্রে সাহায্য করে।
স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হলে সেটা দাম্পত্য জীবনে ভাঙনের সৃষ্টি করে। এর ফলে সংসার জীবন সংক্ষিপ্ত হতে পারে, যার ক্ষতিকর প্রভাবে নষ্ট হতে পারে তাদের স্বাস্থ্য। সুতরাং, অনুরোধের কারণে বিয়ে না করে আনন্দের সঙ্গে স্বেচ্ছায় বিয়ে করা, বিবাহিত জীবনকে উপভোগ করা, সঙ্গীকে ভালোবাসা, সর্বপরি ভালোবাসায় ফিরে আসা মন ও স্বাস্থ্যের জন্য খুবই জরুরি।
যৌন জীবনে রোগের ঝুঁকি কম
যেসব দম্পতি একে অপরকে ভালোবাসেন ও বিশ্বাস করেন তারা প্রতিনিয়ত যৌনসুখ উপভোগ করেন। ফলে তাদের যৌনসঙ্গী খোঁজার প্রয়োজন হয় না। এতে তাদের যৌনজীবনে বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি কম থাকে।
তবে যে দম্পতি এর ব্যতিক্রম ঘটায় এবং একে অপরের সঙ্গে প্রতারণা করে তাদের যৌনরোগ সংক্রান্ত ঝুঁকি বেশি থাকে।
ভালো স্বাস্থ্য
বিয়ের মাধ্যমে স্বাস্থ্যগত অনেক সুবিধা পান দম্পতিরা। তবে নারীরা এ সুবিধা বেশি ভোগ করেন। কেননা ভালো যৌনজীবন তাদের সন্তুষ্টি ও সুখের একটি সম্পূর্ণ অনুভূতি প্রমাণ করে। এই সাময়িক মানসিক অবস্থা শারীরিক স্বাস্থ্যের চেয়ে মানসিক স্বাস্থ্যে বেশি গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রাখে বলে গবেষণায় জানা যায়।
গবেষণায় প্রমাণ হয়েছে যে, অবিবাহিতদের মন-মেজাজ সব সময় দোল খেতে থাকে, স্থির হতে পারে না। এমনকি সব সময় বিষণ্নতায়ও ভোগেন তারা। এর ফলে অবিবাহিতদের স্থাস্থ্যের ওপর অনেক খারাপ প্রভাব পরে।
স্বাস্থ্য সমস্যার সমাধান
শুধু নারীরাই নয়, বিবাহিত নারী-পুরুষ উভয়েই মানসিক ও আবেগগতভাবে ভালো স্বাস্থ্যের অধিকারী হতে পারেন। কারণ তারা একে অপরের পছন্দ ও প্রয়োজন অনুযায়ী যত্ন নিতে পারেন। এটা পুরুষের হৃৎপিণ্ডের জন্য খুবই উপকারী। তাই অবিবাহিত পুরুষদের তুলনায় বিবাহিতদের স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক ও অন্য রোগের ঝুঁকি কম থাকে বলে গবেষণায় দেখা যায়।
আর্থিক অবস্থার সমৃদ্ধি
অবিবাহিত ব্যক্তি বিবাহিত দম্পতিদের তুলনায় টাকা কম খরচ করে এটা অবশ্যই সত্য। তবে দম্পতিরা একত্রে অনেক অর্থ উপার্জন করতে পারেন এবং তাদের আর্থিক অবস্থাও অনেক সমৃদ্ধ হয়।
অন্যদিকে অবিবাহিতরা কম উপার্জনেই তাদের জীবনধারণ করতে পারেন। তাই ভালো কাজ ও বেশি উপার্জনের লক্ষ্যও তাদের কম থাকে। কিন্তু বিবাহিত পুরুষরা তাদের স্ত্রী ও সন্তানদের প্রতি দায়িত্ব অনুভব করে আর্থিক অবস্থার উন্নতি করার চেষ্টা চালিয়ে যান এবং সফল হন।
খারাপ খাদ্যাভ্যাস ত্যাগ
গবেষণায় দেখা যায় যে, বিবাহিতরা তাদের পরিবারের প্রতি দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে মদ বা ড্রাগের মতো খারাপ অভ্যাস থেকে অনেক সহজেই পরিত্রাণ পেতে পারেন। অনেকে তাদের দম্পতি ও সন্তানদের কারণে ধূমপানও ছেড়ে দেন।
অন্যদিকে একজন সঙ্গীহীন ব্যক্তি তার এই আসক্তি থেকে মুক্তির জন্য প্রতিনিয়ত নিজের সঙ্গে যুদ্ধ করেও ব্যর্থ হচ্ছেন। কারণ এই খারাপ অভ্যাসগুলো একক প্রচেষ্টায় ত্যাগ করা খুবই কঠিন।