এম্বুলেন্স নিয়ে গেলেন করোনার রোগী আনতে, গিয়ে দেখলেন রোগী বাড়ি নেই বাজারে গিয়েছে চা খেতে

বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া মরণঘাতী করোনাভাইরাস নিয়ে সবাই মহা আতঙ্কে। পুরো বিশ্ব মিডিয়ায় শিরোনামের ভাষা: করোনা ভাইরাস, সংক্রমণ, মৃত্যু, কোয়ারেন্টাইন, হোম কোয়ারেন্টাইন আর লকডাউন। কারণ এ ভাইরাসের কোনো ওষুধ নেই, নেই কোনো প্রতিষেধক।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের ফলে চীনসহ এশিয়ার কয়েকটি দেশে যে রোগ ছড়িয়ে পড়েছে – তাতে এ পর্যন্ত ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে, সংক্রমিত হয়েছে প্রায় সাড়ে ৪শ লোক।

ভাইরাসটি কোন একটা প্রাণী থেকে মানুষের দেহে ঢুকেছে এবং একজন থেকে আরেকজনের দেহে ছড়াতে ছড়াতে আবার নিজের জিনগত গঠনে সবসময় পরিবর্তন আনছে – যাকে বলে মিউটেশন। তাই এ ভাইরাস হয়তো আর কিছুদিনের মধ্যে আরো বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে, এমন আশংকা রয়েছে।
কিন্তু এ ভাইরাসটির প্রকৃতি এবং কিভাবেই বা তা রোধ করা যেতে পারে – এ সম্পর্কে এখনো বিজ্ঞানীরা বিশদভাবে জানার চেষ্টা করছেন। সার্স বা ইবোলার মতো নানা ধরণের প্রাণঘাতী ভাইরাসের খবর মাঝে মাঝেই সংবাদ মাধ্যমে আসে। এই করোনাভাইরাস তার মধ্যে সর্বশেষ। কিন্তু এটি কি আজ-আছে-কাল-নেই ধরণের কোন ভাইরাস? নাকি এটা তার চেয়ে অনেক বেশি বিপদজনক?
চা হতে পারে প্রতিষেধক এমন সংবাদে মানুষ ছুটছেন চা খেতে।জীবনের মায়া তুচ্ছ করে চা খেতে তুয়াক্কা করছেন না কেউ কেউ।

ভারতে ছড়িয়ে পড়া এরকম একটি খবর হচ্ছে, বেশি বেশি চা খেলে করোনাভাইরাস ঠেকানো যায়। এই গুজবের উৎপত্তি চীনে। ভুয়া পোস্টের স্লোগান ছিল:

এক কাপ চা যে করোনাভাইরাসের সমাধান এটা কে জানতো।

এই ভুয়া দাবিটি সোশাল মিডিয়াতে ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়েছে। তাতে জড়ানো হয়েছে চীনা ডাক্তার লী ওয়েনিলিয়াং-এর নামও।
উহান শহরে এই ভাইরাসের ব্যাপারে তিনিই প্রথম সবাইকে সতর্ক করেছিলেন এবং পরে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
ওই পোস্টে দাবি করা হয় যে ডাক্তার লী চায়ের মধ্যে এমন একটি উপাদান মেথিলজেনথিন্স পেয়েছেন যা ভাইরাসের প্রভাব কমাতে পারে।
ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়া ওই পোস্টে দাবি করা হয় যে চীনে কোভিড-১৯ রোগীদের দিনে তিন বেলা চা খেতে দেওয়া হতো।
এটা সত্য যে চা, কফি ‍ও চকোলেটের মধ্যে মেথিলজেনথিন্স আছে।

কিন্তু ডাক্তার লী যে এর প্রভাব নিয়ে কোন গবেষণা করেছেন তার কোন প্রমাণ নেই। তিনি ভাইরাসের বিশেষজ্ঞ ছিলেন না, বরং ছিলেন একজন চক্ষু বিশেষজ্ঞ।
এছাড়াও চীনে কোভিড-১৯ রোগীদের চা খাইয়েও চিকিৎসা করা হয়নি।
এদিকে জানা  যায় একজনের নিজেকে করোনা সন্দেহ হলে তিনি আইডিসি আর এর হটলাইন নম্বরে ফোন করে নমুনা পরীক্ষা করান।পরীক্ষার ফল পজিটিভ হলে তাকে বাড়ি নিতে আসে জাতীয় স্বাস্থ্য সংস্থার লোকজন। এসে দেখেন তিনি বাড়ি নেই।পরে জানতে পারেন রোগী চা খেতে বাজারে গেছেন।
এম্বুলেন্স নিয়ে গিয়ে রোগীর বাড়ির সামনে রোগীর জন্যে অনেকক্ষন অপেক্ষা করেন তারা।পরে রোগীকে নিয়ে আসেন কি না এটা জানা যায় নি।

You may also like...